বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃ মানিকগঞ্জের মেয়ে “তাসলিমা আক্তার তিতলি “।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০২০ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” তাসলিমা আক্তার তিতলি “।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন মানিকগঞ্জের সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।মানিকগঞ্জের মেয়ে “তাসলিমা আক্তার তিতলি ” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আসসালামু আলাইকুম, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে প্রশ্ন করার জন্য। আমি তাসলিমা আক্তার তিতলি খুবই সাধারণ মানিকগঞ্জ জেলার একটি মেয়ে। বাবার কর্মসূত্রে ঢাকা তেই বড় হওয়া।বাবা মার চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে আমি। প্রতিনিয়ত জীবনকে নতুনভাবে শিখছি।
উদ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো?
প্রথম দিকে অর্থাৎ ছোট থেকে চাকরি করার ইচ্ছা ছিলো খুব। আর যখন বুঝতে শিখলাম, ভাবতে শিখলাম তখন থেকেই কিছু করার আগ্রহ ছিলো।
আপনি এই অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
অনলাইনের আইডল পরে,আমার প্রথম আইডল ছিলো খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ(বিবি খাদিজা)।যিনি প্রথম একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।সে সময় একজন নারীর জন্য ব্যবসায় খুব একটা সহজ ছিলো না।তিনি যদি পারেন তবে আমরাও পারবো।পরবর্তীতে অনলাইনের অনেক আপুদের দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছি।আমার কাছে মনে হয়েছে আমি চেষ্টা করলে ইনশাআল্লাহ পারবো।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
নিজেকে এখনো “সফল”বলবো সেই পর্যায়ে এখনো যাইনি।একদিন ইনশাআল্লাহ সব বাঁধা অতিক্রম করে নিজের পরিচয় অনেক বড় পরিসরে তুলে ধরতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে কাস্টমারদের ভালোবাসা ও ফিডব্যাক যতটুকু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
“ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ” আমার এই ছোট্ট পেজ Sara Fashion House একদিন অনেক বড় হবে।আর আমার নিজের একটা বড় শোরুম থাকবে।পাশাপাশি পথো শিশুদের জন্য কিছু করবো ইনশাআল্লাহ।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি বলতেন?
আমি ঢাকা করাতিটোলা সি.এম.এস মেমোরিয়াল হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক কমপ্লিট করেছি।সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক কমপ্লিট করেছি। তার পর ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কেমিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করেছি ২০১৮ সালে।ইন্জিনিয়ারিং পড়া চলাকালীন সময়েই আমার বিয়ে হয়ে যায়। মাধ্যমিকের পর থেকেই টিউশনি করে পুরো পড়া- শুনা চালাই আমার।আমার হাসবেন্ড মানসিক ভাবে সব সময় আমার পাশে ছিলো। আমার মা আমাকে খুব সাপোর্ট করেছে। তাই নানা প্রতিকূলোতার মধ্যে ও আমি আমার পড়া- শুনা চালিয়ে যেতে পেরেছি।
আপনার চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
“চ্যালেঞ্জ” বারংবার আমার জীবনে এসেছে। প্রতিবার সাহসিকতা আর ধর্য্যের সাথেই মোকাবেলা করে আসছি। ২০১৯ এর ১১ ই এপ্রিল আমার একটি কন্যা সন্তান হয়।আমার মেয়ে একটু ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়।এটা নিয়ে চিন্তা করতে করতে নিজে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ফিরে এসেছি। মেয়ের অপারেশন করে সুস্থ তুলেছি।টিউশনি ছাড়িনি।মধ্যে বিত্ত পরিবার বলে কথা।অধ্যম্ম আগ্রহ ছিলো কিছু করার।ঠিক তখনই মরণব্যাধি করোনা!সব যেন থমকে গেল।হাসবেন্ড এর চাকরি বন্ধ আমারও টিউশন বন্ধ। এভাবে দু’ মাস পার করার পর চিন্তা করলাম আমার একটি ফোন আছে। আমি একটু চেষ্টা করে দেখি।সৎ পথ কখনো সহজ হয় না!
আপনার নতুন প্রোডাক্টগুলো কি কি?
আমি প্রথম দিকে বাচ্চাদের পোশাক নিয়ে কাজ শুরু করি,পরবর্তীতে মেয়েদের থ্রিপিস নিয়ে। ইনশাআল্লাহ মেয়েদের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবো।
বর্তমানে কভিড ১৯ এ ই- কমার্স?
করোনা একটি প্রাণঘাতী ও মরণব্যাধি ভাইরাস। বর্তমানে কভিড১৯ কারণে ই- কমার্স সাড়া পাচ্ছে সারা দেশ ও বিশ্ব।বাংলাদেশ ও কম সাড়া পাচ্ছে না।কিন্তু ঠকছে তার চেয়ে বেশি।অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলছে। কিন্তু প্রতারণা করছে কিছু চক্র,এদের থামানো গেলেই আরও বেশি সামনে এগিয়ে যেত ই- কমার্স।
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন?
পরিশেষে বলতে চাই ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।আমাদের প্রতিটি মেয়েদের উচিত নিজের পায়ে দাঁড়ানো এবং নিজের একটা আলাদা পরিচয় গড়ে তোলা। এর জন্য ধরকার আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য ধারণ ক্ষমতা।কথায় আছে – ” আমরা নারী আমরাই পারি”।
“যে রাঁধে সে চুল ও বাঁধে “।
ধন্যবাদ সবাইকে, সবাই করোনা পরিস্থিতিতে সচেতন থাকবেন।আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পেজের নাম ও লিংক।
আসসালামু আলাইকুম