বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃ নোয়াখালীর মেয়ে “আসমাউল হুসনা”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০২০ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” আসমাউল হুসনা”।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন নোয়াখালীর সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।নোয়াখালীর মেয়ে “আসমাউল হুসনা” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আসসালামু আলাইকুম, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে প্রশ্ন করার জন্য। আমি আসমাউল হুসনা। অনলাইন জগতে সবাই নাভিয়া বলেই চিনে।আমার বাবা নাই, মারা গেছেন প্রায় ১০ মাস হইছে।মা আছে, আর আমি সহ বোন ৪ জন,কোনো ভাই নেই। তাই এখন সংসারের ভাড় আমার উপরে।এখন আল্লাহর রহমতে আমিই সংসার চালাই।
উদ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো?
আমি যখন প্রথম অনলাইনে কাজের বিজ্ঞপ্তি দেখি তখন আমার আগ্রহ হলো যে আমিও দেখি এটা কেমন কাজ, আর ঘরে বসে ইনকাম করে যদি নিজের পড়ার খরচটা অন্তত চালাতে পারি তাও মন্দ না। তারপর আস্তে আস্তে ৪ মাস আমি কাজ করলাম অন্য একজনের পেইজে। তারপর আব্বু মারা যাওয়ার পর আমি ভাবলাম যে ওই আপু টা যদি নিজে উদ্যোক্তা হয়ে সব কিছু সামাল দিতে পারে তাহলে আমি কেন পারবোনা, আমাকেও সাবলম্বি হতে হবে, তাই আমিও নিজের চেষ্টা চালিয়ে গেলাম আর আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবা, মা সবার দো’আয় এখন অনেকটা এগিয়ে গেলাম।
আপনি এই অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
অনলাইনেব আমার প্রথম আইডল শামীমা স্বর্ণা আপু।যিনি প্রথম একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।সে সময় একজন নারীর জন্য ব্যবসায় খুব একটা সহজ ছিলো না।তিনি যদি পারেন তবে আমরাও পারবো।পরবর্তীতে অনলাইনের অনেক আপুদের দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছি।আমার কাছে মনে হয়েছে আমি চেষ্টা করলে ইনশাআল্লাহ পারবো।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
নিজেকে এখনো “সফল”বলবো সেই পর্যায়ে এখনো যাইনি।একদিন ইনশাআল্লাহ সব বাঁধা অতিক্রম করে নিজের পরিচয় অনেক বড় পরিসরে তুলে ধরতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে কাস্টমারদের ভালোবাসা ও ফিডব্যাক যতটুকু পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
“ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ” ভবিষ্যৎতে আরও বড় উদ্যোক্তা হতে চাই তখন মানুষের চাওয়া পাওয়া যেন মেটাতে পারি এই ইচ্ছাটাই আছে আমার।যেমন মানুষ যেরকম পণ্য যায় বা তাদেরকে সব সময় যেন ভালো এবং উত্তম জিনিস যেন দিতে পারি।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি বলতেন?
আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার শেষ। এবার ডিগ্রি তে ভর্তি হব ইন শা আল্লাহ।
আপনার চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
একমাত্র মনে সাহস আর মা বাবার দো’আ আমার মাথায় আছে বলেই সব চেলেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারি। আর আল্লাহর উপর সব সময় ভরসা রাখি তাই বিপদে ভয় পাইনা।
আপনার নতুন প্রোডাক্টগুলো কি কি?
ইন্ডিয়ান ড্রেস, ঈদের জন্য কাপল সেট আর জামদানী, জুম & ঝর্ণা শাড়ির ফুল প্যাকেজ।
বর্তমানে কভিড ১৯ এ ই- কমার্স?
করোনা একটি প্রাণঘাতী ও মরণব্যাধি ভাইরাস। বর্তমানে কভিড১৯ কারণে ই- কমার্স সাড়া পাচ্ছে সারা দেশ ও বিশ্ব।বাংলাদেশ ও কম সাড়া পাচ্ছে না।কিন্তু ঠকছে তার চেয়ে বেশি।অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলছে। কিন্তু প্রতারণা করছে কিছু চক্র,এদের থামানো গেলেই আরও বেশি সামনে এগিয়ে যেত ই- কমার্স।
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন?
উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আমরা পারি, আমরা পারবই, আমাদেরকে পারতেই হবে এই প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাবেন। বিশ্বাস রাখবেন নিজের প্রতি, সৎ থাকবেন, ধৈর্য্য রাখবেন সফলতা একদিন নিশ্চই আসবে। আর সম্মানিত ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বলব আপনারা অনলাইনে কেনাকাটা করবেন অবশ্যই তবে একটু খেয়াল করে পেজের সত্যতা যাচাই করে, কাস্টমার রিভিউ দেখে এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি তে। তবে যারা প্রি অর্ডার নিয়ে কাজ করে তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু আলাদা, সেক্ষেত্রে কাস্টমার অবশ্যই তার ভরসার পেজ থেকেই প্রি অর্ডার বেজ অর্ডার গুলো দিয়ে থাকে। পরিশেষে এটাই বলব যদি ক্রেতা বিক্রেতা সকলেই সকলের বিশ্বাস টা রক্ষা করে চলি তবে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব। কারণ বিজনেস টা একদিনের জন্য নয় বিজনেস টা সারাজীবনের। আর এটাই আপনার পরিচয়। সকলেই দোয়া রাখবেন আমার জন্য, ধন্যবাদ।