বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃ সিলেটের মেয়ে “কাজী নিলুফা আক্তার”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০১৭ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” কাজী নিলুফা আক্তার”।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন সিলেটের সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।সিলেটের মেয়ে “কাজী নিলুফা আক্তার” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আমি কাজী নিলুফা আক্তার।জন্মসূএে আমি একজন সিলেটী।সিলেটের সবুজ গাছপালা আর চায়ের সংমিশ্রণের সাথেই আমার বেড়ে ওঠা।পাঁচ ভাইবোন(তিন ভাই,দুই বোন)এর মধ্যে আমি চতুর্থ।শৈশব থেকেই স্রোতে বিপরীতে যেয়ে নতুন কিছু করার প্রবনতা আমার মধ্যে ছিলো।নতুন সব কিছুতেই চেষ্টা করার মধ্যে অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করে।
উদ্দ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হল?
শৈশব থেকেই আসলে আমি উদ্যেক্তা শব্দটির সাথে অনেক পরিচিত।পরিবারের সাথে হঠাৎ নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা বিদ্যালয়ের সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করা,এসব কার্যকলাপ এর সাথেই সফলতা অর্জন করায় নিজেকে নিয়ে নতুন ভাবে ভাবতে শুরু করি।একদিন ফেইসবুক ব্যবহার করার সময় আমি লক্ষ করি আমার মতো অনেক সাধারণ নারী ই অনলাইনে প্রোডাক্ট বিক্রি করতেছে।বিষয়টা নিয়ে আমি আগ্রহ বোধ করি এবং আমার হাজব্যান্ড কে জানাই।এ বিষয় নিয়ে আমি খোঁজখবর নেই এবং এই প্লাটফর্মে আমি নিজে একজন উদ্যেক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।আর আমার এই ডিসিশনে আমার হাজব্যান্ড, আমার মা,শ্বশুর শ্বাশুরী আমাকে অনেক সাপোর্ট করেন।
আপনি অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
আমি কিছু গ্রুপের সাথে যুক্ত আছি যেমন ব্যবসায়ী আলাপ, বিজনেস কমিউনিকেশন এসব গ্রুপ থেকেই অনেক কিছু শিখি এবং অনুপ্রেরনা পাই।ব্যবসায়ী আলাপের এডমিন নীল ভাইয়া ও স্বর্না আপু আমাদের উদ্যেক্তাদের গাইড করে যাচ্ছেন।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
আসলে কি সফলতার কোন শেষ নেই।আপনি যখন কোনো একটি বিষয়ে কিছু অর্জন করবেন,ঠিক তখনই পরবর্তী একটি লক্ষ্য আপনার মনে স্হির হয়ে যাবে।সেই লক্ষ্য নিয়ে আপনার পরিকল্পনা শুরু হয়ে যাবে।আমার সফলতা নিয়ে যদি বলতে বলেন তাহলে বলবো আলহামদুলিল্লাহ আমি শতভাগ সফল।অনলাইন প্লাটফর্মে কাজ করে সবচেয়ে বড় সফলতা হলো আমি এখন নিজে স্বাবলম্বি।স্বামীর কাছে টুকটাক খরচের টাকা খুজতে হয়না।ছেলেদের নিত্য দৈনন্দিন খরচ নিজেই চালিয়ে নিতে পারি।পরিবারকে ও কিছুটা হেল্প করতে পারি।অনলাইনে কাজ করার মাধ্যমে অনেক ভালো খারাপ মানুষের সাথে পরিচিত হয়েছি এরমধ্যে ভালোর সংখ্যা ই বেশী।সেই সব মানুষদের সাথে কথা বার্তা,বিজনেস নিয়ে পরিকল্পনা ভাগাভাগির মাধ্যমে অনেক নতুন কিছু শিখেছি।এগগলো আমার বাস্তব জীবনে চলার ক্ষেত্রে অনেক সহযোগীতা করে।সেই দিক দিয়ে আমি সফলই বলা চলে।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো আমার মতো অনেক নারী ই আছেন ঘরে বসে কিছুই করেন না।তাঁদের অনেক প্রতিভা আছে যেহেতু হাতের কাজের পণ্য নিয়ে কাজ করি সেই সব মহিলাদের প্রতিভাকে ডামনে নিয়ে আসবো।হাতের কাজের কর্মী আরো বাড়িয়ে তাদের প্রতিভা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।আরেকটা ব্যক্তিগত দিক থেকে যদি বলেন তা হলো সামনের দিকে আল্লাহ যদি বাচাইয়া রাখেন একটা শোরুম দেওয়া,যা একান্তই নিজের বলে উপস্থাপন করতে পারবো।আর যে পণ্য নিয়ে এখন কাজ করি সেগুলোর মান এবং আরো অনেক নতুন নতুন প্রোডাক্ট এড করার ইচ্ছা আছে।দোয়া করবেন আমার জন্য।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি বলতেন?
আমি বি এ পাশ এরপর আর পড়াশুনা করা হয়নি।
আপনার চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
অদম্য ইচ্ছা,সততা,আর পরিশ্রম এর মাধ্যমে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি।কখনো আশেপাশে থাকা মানুষ গুলোর কথায় কান দেইনি।অনেকে অনেক কথা বলছে কোন পাত্তা দেইনি নিজের মতো করে কাজ করে গেছি।আর দেখেন আজকের এই আমি।
আপনার নতুন প্রোডাক্ট গুলো কি?
আমার নতুন প্রোডাক্ট হচ্ছে হাতের কাজের জামা,শাড়ী,বিছানার চাদর,নকশীকাঁথা আরেকটা নতুন সংযোজন হচ্ছে টাংগাইলের হাফসিল্ক জামদানী।
বর্তমানে কোভিড১৯ এ ই-কমার্স?
মূলত এখন বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীতেই করোনার জন্য থমথমে পরিস্থিতি!এমন অবস্থায় সবাই অনলাইন পদ্ধতিকেই বেছে নিচ্ছেন।কারন এটা অনেক নিরাপদ সবার জন্যই।তাই আমরা উদ্যোক্তারাও চাই এই মহামারীর সময়ে নিজেদের সবচেয়ে ভালো পণ্যটাই ক্রেতার হাতে তুলে দিতে!যদিও এখনো সবাই সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করে উঠতে পারেন নি তবুও এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ!
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশে কিছু বলুন?
স্রোতাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলতে চাই দেশীয় পণ্য সর্বএ ছড়িয়ে দেওয়ার lলক্ষ্যে নতুন উদ্যেক্তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।কারন এসব উদ্যেক্তাদের মাধ্যমে দেশে অনেক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে এবং এই দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।