বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃকুমিল্লার মেয়ে “নুসরাত আক্তার”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০১৮ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” নুসরাত আক্তার”।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন কুমিল্লার সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।কুমিল্লার মেয়ে “নুসরাত আক্তার” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আসসালামু আলাইকুম,আমি নুসরাত আক্তার। পিতাঃআক্তার হোসেন। মাঃ অজুফা আক্তার। জন্ম ২৯ শে এপ্রিল ১৯৮৫ কুমিল্লা সদর হাসপাতালের সামনে পারিবারিক বাস ভবনে। জন্ম সূত্রে সরকারি চাকুরীজীবি পিতামাতার একমাত্র সন্তান হওয়ায় সব সময় সুস্থ স্বাধীন আত্নপরিচয় সম্মিলিত ব্যাক্তিত্ব গঠন করার সুযোগ মিলে।
উদ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো?
ছোটবেলা হতে পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ উদ্যোগ গ্রহনে অনুকুল থাকায় আমি যেকোন প্রতিকূল পরিবেশকে পার করে যাওয়ার আত্নপ্রত্যয় নিজের ভিতর নিয়ে বড় হতে থাকি। যদিও এ সুসময় জীবনে খুব বেশী থাকেনি।আমি যখন বুজতে পারলাম যে আমার মাঝে অনেকের জন্য কিছু করার ক্ষমতা আছে তখন আমি নিজে কিছু করার কথা ভাবলাম।
আপনি এই অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
আমি বাংলাদেশের গৃহিণীদেরকে আমার আইডল মনে করি।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
আমি নিজের একটা পরিচয় দাঁড় করাতে পেরেছি। এটা আমার কাছে অনেক বড় সফলতা। সফলাতাকে যদি অর্থের মানদণ্ড দিয়ে মাপেন তাহলে হয়ত আমি বিফল কারন এখনও আমি লাখ লাখ টাকা রোজগার করি নাই।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। ভালোবাসি স্বপ্ন দেখাতে।
একদিন এদেশের একটি নারীও কারো কাছে টাকার জন্য হাত পাতবে না এ নিয়ে কাজ করে যাব এটাই আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি বলতেন?
আমি লায়ন্স কিন্ডারগার্টেন দিয়ে পড়ালেখায় হাতে খড়ি তারপর, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল রিয়াদ, সৌদি আরবে কিছু বছর পড়ি। কুমিল্লার নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি. পাশ করে ভিক্টোরিয়া সরাকারি কলেজ এ এইচ এস সি। পাশাপাশি গার্লস গাইড, রক্তদান, সেচ্ছাসেবী কাজ চলতো।কম্পিউটার এর প্রতি বিশেষ দুর্বলতা থাকার কারনে সিএসই তে বিএসসি করতে ইউকে তে ভর্তি হই কিন্তু ভিসা না হওয়ায় যাওয়া হয় না। আমার অবুজ মনের কারনে আমি আরকোন সাবজেক্টে পড়বো না সংকল্প বদ্ধ। ততদিনে আমার ঝুলিতে হার্ওয়্যার সফটওয়্যার এর বেশকটি সনদ বেশ নামি প্রতিষ্ঠান হতে জমা পড়েছে । কিন্ত আমি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মাঝ পথে বিরতি দিয়ে রেখেছি। অবশেষে দুই সন্তানের জননী হয়ে স্বামীর শত বাধা আর অশান্তি কে আগ্রহ্য করে ইউনিভার্সিটি অব ডারবীতে এল এল বি অনার্সে ভর্তি হই। শেষ করি নিজের অশিক্ষিত জীবন।
আপনার চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
ভাবতে ভালো লাগে ক্ষয়ে যাওয়া আমি ঝরে যাওয়া আমি আজ একটি মানসম্মত ডিগ্রীর অধিকারী।এখন মনে হয় তখন একটা ঘোরের মাঝেছিলাম। আমি পারবো আমাকে যে পারতেই হবে এই তাড়না থেকে সংসার, সমাজ সবার আঘাত গুলো সয়ে গেছি। খুব সহজ ছিল তাতো নয়। আমি অতিমানবীও নই। ভেংছি, পরেছি আবার চলেছি। এই করে স্বপ্ন ভাংগা প্রহরগুলোতে আবার রংগীন স্বপ্ন বুনেছি।
আপনার নতুন প্রোডাক্ট গুলো কি কি?
আমি এখন কাজ করছি উন্নত বিস্বের স্বল্পমুল্য ল্যাপটপ ও এর নানা বিধ যন্ত্রাংশের উপর।
বর্তমানে কভিড১৯ এ ই-কমার্স?
কভিড১৯ এ ই- কর্মাস একটি নতুন সম্ভবনার দুয়ারে পরিনত হয়েছে।কারন এই মহামারির সময় যেখানে পুরু জনজীবনে থমকে গিয়েছিল সেখানে ঘরে বসে নারীরা ই-কর্মাসের মাধ্যমে দেশের অর্থনেতিক অবস্থার বিশাল অংশ জুড়ে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছিলো।আর এখন সরকারের পক্ষ থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে বসে বিভিন্ন ই-কমার্স নির্ভর কোর্সের ব্যবস্থা করছেন।যেগুলো আয়ও করে প্রযুক্তি এবং নিজের ইচ্ছা, স্বপ্ন, ধৈর্য্য কে কাজে লাগিয়ে যে কেও সহজে নিজেকে প্রতিষ্ঠত করতে পারবে।
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন?
বলার জন্য আসলে কথার শেষ নেই। কিন্ত শেষ করবো প্রয়াত দুজন বিখ্যাত মানুষের উক্তি দিয়ে
” স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটা যেটা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।”
রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবুল কালাম
” তুমি যদি ঘর ঝাড়ু ও দাও, এমন ভাবে দিবে যাতে এটা তোমার চেয়ে ভালো কেউ দিতে না পারে।”
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক।