বিবিসিনিউজ২৪,ডেস্কঃ কুমিল্লার মেয়ে “নুসরাত জাহান তিহা”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০১৮ সাল থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” নুসরাত জাহান তিহা”।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন কুমিল্লার সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।কুমিল্লার মেয়ে “নুসরাত জাহান তিহা” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিবিসিনিউজ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আসসালামু আলাইকুম,আমি নুসরাত জাহান তিহা,কুমিল্লার কন্যা,আমার পরিচয়,আমি একজন নারী এবং একজন উদ্যোক্তা পাশাপাশি একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করছি।আমি মূলত কাজ করছি,দেশীয় শাড়ি এবং গহনা নিয়ে।আমার পেজ এর নাম Jahan ZONE and Jahan’s Raiment।
উদ্যোক্তা আগ্রহ কিভাবে তৈরি হলো?
ছাত্রজীবন থেকেই আমার মাঝে একটা আগ্রহ জন্মে,আমি আমার নিজের জন্য কিছু করব,নিজের পরিচয়ে বড় হবো,মূলত নিজেকে স্বাবলম্বী করে তোলার মানসিকতা থেকেই আমি আমার অবসর সময় টি কে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করি,আর এভাবেই আমার উদ্যোগতা জীবনের পথচলা শুরু।
আপনি এই অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসেবে দেখছেন?
সত্যি বলতে তেমন নিদিষ্ট কাউকে আইডল হিসেবে দেখিনি ,আমি মূলত সবার কাজগুলো দেখে তা থেকে শিক্ষাটা নিয়ে নিজের পরিকল্পনার সাথে মিশ্রণ করে সামনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি।
কতটুকু সফলতা লাভ করেছেন বলে মনে করেন?
আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহ কাছে অনেক অনেক শোকরিয়া,এই অল্প সময়ে এত দূর আসতে পারবো ভাবিনি,তবে আমার পথচলা তো মাএ শুরু,আমার স্বপ্নপূরনের জন্য যে পাড়ি দিতে হবে আমায় আরো বহুদূরের পথ।
আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
নিজের প্রতিষ্ঠানটিকে বিস্তর পরিসরে নিয়ে যাওয়া।যেখানে আমার সাথে আরও আট-দশটা মানুষ ও নিজেকে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।নিজের কাজ বা পরিচয়টিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাতে অনান্য পিছিয়ে পরা মানুষগুলো নতুন করে স্বপ্ন দেখবার অনুপ্রেরণা পায়।তারাও যেনো নিজের উপর আত্মবিশ্বাস এনে নতুন করে পথচলা শুরু করতে পারে।”আমরা নারী, আমরাই পারি”।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি বলতেন?
আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ হতে ইংরেজি সাহিত্যের উপর আমার গ্জু গ্রেজুয়েশন এবং মাষ্টার্স কমপ্লিট করেছি।
আপনার চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন?
সাধারণত আমাদের সমাজে নারীদের যে কোন কাজ করা টা কে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখা হয়,তবে সেসব কথা কিংবা সমালোচনা কে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা আমি আমার পরিবার কাছ থেকেই পেয়েছি এবং সে ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছি।আমি মনে করি আমার সফলতাই একদিন তাদের সমালোচনা কে পাশ কাটিয়ে আলোচনায় পরিনত করবে ইনশাআল্লাহ।
আপনার নতুন প্রোডাক্ট গুলো কি কি?
আমার পেইজ যেহেতু দেশিও তাঁতের শাড়ি এবং গহনা নির্ভর।তাই সবসময় চেষ্টা থাকে গহনার নতুন নতুন ডিজাইনগুলো পালাক্রমে নিয়ে আসতে।আর শাড়ির ক্ষেএে বলবো দেশিও শাড়ির উপর আমার নিজের ডিজাইন করা হ্যান্ড পেইন্টিং এবং ব্লকের কাজ করা শাড়িগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।সেগুলো নিয়ে আরও বৃহৎ আকারে কাজ করবার ইচ্ছে আছে।
বর্তমানে কভিড১৯ এ ই-কমার্স?
কভিড১৯ এ ই- কর্মাস একটি নতুন সম্ভবনার দুয়ারে পরিনত হয়েছে।কারন এই মহামারির সময় যেখানে পুরু জনজীবনে থমকে গিয়েছিল সেখানে ঘরে বসে নারীরা ই-কর্মাসের মাধ্যমে দেশের অর্থনেতিক অবস্থার বিশাল অংশ জুড়ে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছিলো।আর এখন সরকারের পক্ষ থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে বসে বিভিন্ন ই-কমার্স নির্ভর কোর্সের ব্যবস্থা করছেন।যেগুলো আয়ও করে প্রযুক্তি এবং নিজের ইচ্ছা, স্বপ্ন, ধৈর্য্য কে কাজে লাগিয়ে যে কেও সহযে নিজেকে প্রতিষ্ঠত করতে পারবে।
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন?
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ যারা আমার কথাগুলো এতক্ষণ ধরে পড়ছিলেন।আপনাদের একটুখানি অনুপ্রেরণাই কিন্তুু পারে নারীকে অনেক ধাপ নিমেষে এগিয়ে নিয়ে যেতে।তাদের মেধাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিন আর তাদের চেষ্টাটাকে সাপোর্ট করুন।দেখবেন তা থেকে দারুণ কিছুই বের হয়ে এসেছে।যেখানে নারীর উন্নয়নে সরকার এত কিছু করছেন এবং ভবিষ্যত উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ গ্রহন করছেন সেখানে আমরা কি পারিনা একটুখানি সহমর্মিতা দেখাতে?
পরিশেষে ধন্যবাদ জানাতে চাই বিবিসি নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম ডটবিডি’কে যারা নারীদের অনুপ্রেরণা স্বরুপ, নিজেকে তুলে ধরবার জন্যে এত সুন্দর একটি প্লাটফর্মের ব্যবস্থা করেছেন।