রাঙ্গামাটি প্রতিনিধিঃ রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি এলাকায় দোকানে ঢুকে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা ছিনতাই, ব্যবসায়ীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল আলম রাশেদসহ ৪জনের বিরুদ্ধে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় মামলা করেছে রফিকুল ইসলাম (বাদশা) নামের এক ব্যবসায়ী।
গত শুক্রবার (১৯মার্চ) মো: শাহ আলম (২৪), সাইফুল আলম রাশেদ (৩৬), আবুল হাসানত মিঠু (৩৫) ও নাজমুল হাসান বাপ্পু (২৩) এর বিরুদ্ধে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন তবলছড়ি এডিসি কলোনীস্থ মা ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম (বাদশা)।
মামলার বিষয়টি রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি মো: কবির হোসেন নিশ্চিত করে বলেন,ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম রাশেদসহ ৪জনের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার (১৯মার্চ) আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি আমলে নিয়েছি। মামলার প্রক্রিয়া বর্তমানে তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আমি রফিকুল ইসলাম (বাদশা)। আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার নিজের নামীয় রাঙামাটি কোতয়ালী থানাধীন তবলছড়ি এডিসি কলোনীস্থ মা ফার্মেসী ঔষুদের দোকান রয়েছে। গত ১৮ মার্চ রাত আনুমানিক ১১টায় সময় উক্ত বিবাধীগণ আমার দোকানের সামনে উপস্থিত হয়ে হঠাৎ করে আমাকে দোকানে বাহিরে আসতে বলে। আমি মনে করেছি বিবাধীগণের কোন ঔষুধ লাগবে সেই জন্য আমাকে ডাকতেছে। আমি সরল মনে বিশ্বাস করে দোকান থেকে বের হয়ে বলি আপনাদের কোন ঔষুধ লাগবে নাকি। এই কথা বলার পর ১নং ও ২নং বিবাদী আমাকে বলে যে, আমাদের কোন ঔষুধ লাগবে না। আমরা না বলা পর্যন্ত এখন তুই দোকানে ডুকবি না।
আমি তাদের বলি যে আমি দোকানে হিসাব নিকাশ করতেছি। আমি দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যাবো। এই কথা বলার পর উপরোক্ত বিবাধীগণ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমি তাদের গালি দিতে নিষেধ করলে কোন কারণ ছাড়াই ১নং ও ২নং বিবাধী এলোপাতাড়ি তাদের সাথে থাকা হব স্টিক দিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে এবং বিবাধীগণের মধ্যে যেকোন একজন আমার দোকানের ভিতর ঢুকে আনুমানিক ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।
আমি প্রাণ রক্ষার্থে দৌড় দিয়ে সবুর ঠিকাদারের বাসার সামনে পৌছালে বিবাধীগণ আমার পিছনে পিছনে দৌড় দিয়ে তাদের হাতে থাকা লাঠি ও হক স্টিক আমার পায়ে ছুড়ে মেরে আমাকে ফেলে দেয়। আমি মাটিতে লুঠিয়ে পড়লে উপরোক্ত বিবাদীদের হাতে থাকা লাঠি ও হক স্টিক দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। আমি জীবন বাঁচানোর জন্য চিৎকার করতে থাকলে আশে পাশের লোকজন এসে আমাকে বিবাধীগণের হাত থেকে উদ্ধার করে।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়,বিবাদীগণ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে বলে যে, আমি এ ঘটনা নিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। পরে আমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধাকারীরা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
প্রসঙ্গত, রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল আলম রাশেদ কে গত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০ইং তারিখে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ ১বছর ১মাস পর চলতি মাসের ১২মার্চ তারিখ রাশেদের নিজ আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কাদেশ প্রত্যাহার করেন।