এজি কায়কোবাদ, বিশেষ প্রতিনিধিঃ গাজীপুর সদর হতে উদ্ধারকৃত অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহের পরিচয় উদঘাটন, আসামী গ্রেফতার এবং মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই।
গত ১৩/১২/২০১৮ তারিখ ১৩.০০ ঘটিকার সময় জিএমপি সদর থানাধীন পোড়াবাড়ী পূর্বপাড়া (কোনাপারা) সাকিনস্থ জাকির হোসেন এর পুকুরের উত্তর পূর্ব কোনে কাদার মধ্যে মাটিচাপা অবস্থায় অত্র মামলার ডিসিস্ট অজ্ঞাতনামা মহিলা (৩২) এর বিবস্ত্র মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতাকে স্থানীয় কেউ সনাক্ত করতে না পারায় জিএমপি সদর থানার এসআই (নিঃ)/ মোহাম্মদ মাহবুব বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে সদর থানার মামলা নং-২৭ তারিখ- ১৫/১২/২০১৮ ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড মামলাটি রুজু হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় ভাবে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্তভার পিবিআই গাজীপুর জেলার উপর ন্যস্ত হয়।
পিবিআই, গাজীপুর জেলার উপর মামলার তদন্তভার অর্পণ হলে পিবিআই তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব এস এম শাকিল হাসান নিহত অজ্ঞাতনামা মহিলাকে সনাক্ত এবং মামলার ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক মূল আসামীকে গ্রেফতার করার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অত্র মামলার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত মোঃ মোকসেদ আলী (৪২), পিতা- মৃত জহির উদ্দিন, সাং- পোড়াবাড়ী পূর্বপাড়া কোনাপাড়া, থানা- সদর, জিএমপি, গাজীপুরকে জিএমপি বাসন থানাধীন টেকনগপাড়া এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে অত্র মামলার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত অপর আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৮), পিতা- মোঃ আলমাছ উদ্দিন, সাং- পোড়াবাড়ী পূর্বপাড়া কোনাপাড়া, থানা- সদর, জিএমপি, গাজীপুরকে তার নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করা হয়।
ইং-২৩/১১/২০২০ তারিখ মামলার ভিকটিম শিখা আক্তারকে হত্যার বিষয়ে আসামী মোঃ মোকসেদ আলী তার প্রদত্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজেকে জড়িয়ে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অপর সহযোগী আসামীদের নাম প্রকাশ করে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামী মোকসেদ তার জবাবন্দিতে প্রকাশ করে যে, ডিসিষ্ট শিখা আক্তারের সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল।
আসামী মোকসেদ ডিসিষ্ট শিখা আক্তারের কাছ থেকে গরু কেনার জন্য ১,৫০,০০০/= টাকা ধার নেয়। পরবর্তীতে ডিসিষ্ট শিখা আক্তার আসামী মোকসেদ এর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে আসামী মোকসেদ টাকা ফেরত না দিয়ে ডিসিষ্ট শিখা আক্তারকে ঘটনাস্থল পার্শ্ববর্তী হাজীর বাগানের গজারী বনের ভিতরে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাষরোধ করে হত্যা করে এবং সহযোগী অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় লাশ বিবস্ত্র করে ঘটনাস্থলের পুকুর পাড়ে গর্ত করে মাটিচাপা দিয়ে রাখে।
ভিকটিম শিখা আক্তারকে হত্যার পর ঘটনাস্থলে মাটি গর্ত করার কাজে ব্যবহৃত কোদালটি আসামী মোকসেদ এর অব্যবহৃত বসত ঘর হতে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে জব্দ করা হয়।