আপনার তৈরি করা ভিডিওর সম্পূর্ণ স্বত্ব অধিকার আপনার। অর্থাৎ আপনি যে ভিডিওটি তৈরি করেছেন সেটার কপিরাইট আপনার। আপনি ওই ভিডিওটি ইউটিউবে চালানোর অনুমতি দিয়েছেন। তাই ভিডিওটি কে আপলোড করেছেন ইউটিউবে। আপনি চাইলে ওই ভিডিওটি ফেসবুক প্লাটফর্ম কেও পাবলিশ করার অনুমতি দিতে পারেন। এছাড়াও আরও যদি কোন প্ল্যাটফর্ম এ আপনি ভিডিওটি আপলোড করতে চান তাহলে আপনি করতে পারেন। এক্ষেত্রে ইউটিউব বা ফেসবুক বা অন্য কারোর কোন আপত্তি আইনত থাকতে পারে না।
কিন্তু! হ্যাঁ এখানে একটা কিন্তু রয়েছে। কারণ নামে আমরা ইউটিউব পার্টনার বা ফেসবুক পার্টনার কিন্তু দুর্বল আর শক্তিশালী এর মধ্যে কোন চুক্তি হতে পারে না আর যদি চুক্তি হয় তাহলে সেটা সদা ভঙ্গুর চুক্তি।
এই কারনে মাঝেমধ্যে দেখা যায় যে ইউটিউবের ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করার পর ইউটিউব থেকে নোটিশ আসে রিইউজ কন্টাক্ট। আর রিইউস কনটেন্ট হওয়ার জন্য মনিটাইজেশন বন্ধ করে দেওয়া হল। তখন আমাদের চিঠি চাপাটি করে ইউটিউব কে ম্যানেজ করতে হয়। অনেক সময় করা যায় আবার অনেক সময় করা যায় না।
সুতরাং রিক্স নেওয়ার দরকার নেই। যেখান থেকে টাকা রোজগার হচ্ছে সেখানে ভিডিওটা আপলোড করে রাখুন।
আমার যতদূর ধারণা ফেসবুক থেকে ভিডিওর মাধ্যমে রোজগার খুব কম মানুষেরই হয়।
অন্যদিকে ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে রোজগার করার প্লাটফর্ম। ইউটিউব থেকে যে ভালো রোজগার করতে পারে সেই টিকে থাকে আর যে পারেনা তাকে ইউটিউব ধীরে ধীরে অ্যালগোরিদমের খাড়া দিয়ে আস্তে আস্তে অদৃশ্য করে দেয়। তাই ইউটিউব থেকে যদি রোজগার হয়, তাহলে সেখানেই ফোকাস করা বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনি যদি জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য ফেসবুক কে ব্যবহার করেন তাহলে ফেসবুকের জন্য আলাদাভাবে ভিডিও বানান এবং সেখানে পোস্ট করুন।
আইনত কোন সমস্যা না থাকলেও একই ভিডিও দুটো প্লাটফর্মে চালানো ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
ফেসবুক থেকে রোজগার করতে গেলে 4 মিনিটের ওপর ভিডিওতে কমপক্ষে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম এর প্রয়োজন। তারপর এপ্লিকেশন করলে, কখনো অ্যাপ্রুভ করে কখনো অ্যাপ্রুভ করে না। কখনো আবার অনন্তকাল ধরে রিভিউতে পরে থাকে। শুধুমাত্র প্রফেশনাল ভিডিও কনটেন্ট মেকারদের মাধ্যমে ফেসবুক তার ব্যবসা করে না। তারা এরকম করতে আগ্রহীও নয়। সত্যি কথা বলতে ফেসবুক লোক দেখানো একটা রেভিনিউ শেয়ারিং অপশন তৈরি করে রেখেছে। মার্ক জুকারবার্গ এর মূল টার্গেট মার্কেট থেকে টাকা তুলে তার নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকানো। সেই কারণে ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট এর ওপর বেশি জোর দেয়। লক্ষ্য করবেন আপনি। আপনার ফেসবুক পেজে কোন কিছু পোস্ট করলেই সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক বুষ্ট ইওর পোস্ট বলে একটা অপশন তলায় দিয়ে টাকা রোজগার করার জন্য হাগুরে পানা করতে থাকে। 50 100 200 যে টাকাই আপনার কাছ থেকে ম্যানেজ করা যায় তাতেই ওরা মহাখুশি।
অন্যদিকে ইউটিউব এর মূল ব্যবসাটাই হচ্ছে কনটেন্ট মেকারদের মাধ্যমে ভালো ভালো ভিডিও তৈরি করে সেগুলোতে বড় বড় কোম্পানির অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দিয়ে রোজগার করা। 2000 টাকার নিচে অ্যাড ক্যাম্পেইনিং করবার জন্য ইউটিউব থেকে আপনি কি কখনো কুপন পেয়েছেন? না পান নি। কারণ ওদের টার্গেট অনেক বড়। এমনকি ইউটিউব নিজের জন্য অ্যাডভার্টাইজমেন্ট রেভিনিউ থেকে 40% নিয়ে বাকি 60 শতাংশ কনটেন্ট মেকারদের প্রদান করে।
আমরা কন্টেন মেকাররা এলি থেলী গঙ্গু তেলি তো আর নই, যে সব জায়গায় কনটেন্ট শেয়ার করে বেড়াবো। সুতরাং ফেসবুক যেদিন টাকা দেবে সেদিন ওদের ভালো ভালো কন্টাক্ট পোস্ট করার পরিকল্পনা করা যাবে। আপাতত, ইউটিউব যখন ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে ওদের সাথে ব্যবসা ভালোভাবে করার পরিকল্পনা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
আর জনপ্রিয়তার জন্য ফেসবুকে গিয়ে লাইভ করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপনি কি কি বিষয় ভিডিও বানিয়েছেন। লোকের কেন উচিত আপনার ইউটিউব চ্যানেল জয়েন করা এসব নিয়ে কথা বলুন। প্রমোশনাল মার্কেটিং টা মন্দ হবে না।